বায়ু দূষণ শুধু ফুসফুসেরই ক্ষতি করে না, মানব শরীরের অঙ্গগুলিও খারাপ করে দিতে পারে। বিশ্বে বাড়ছে বায়ু দূষণ। কলকাতার দাবি, প্রায় ৩০ শতাংশ বায়ুদূষণ ছড়াচ্ছে চলন্ত গাড়ি বা যানবাহনগুলি। তাঁদের সরকারি সমীক্ষাতেই উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।

এমন পরিস্থিতিতে বায়ুদূষণের রাশ টানতে উদ্যোগী হল কলকাতার রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ (পিসিবি)। পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে তারা বাছাই করা সরকারি এসি ও নন-এসি ৯০টি বাসে বিশেষ যন্ত্র বসানোর কাজ শুরু করেছে। এর মাধ্যমে বাসের ভিতরে পরিশুদ্ধ বাতাসের জোগান দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে যে রাস্তা দিয়ে এই বাসগুলি যাবে, সেখানকার বাতাসের ধূলিকণা ও দূষণ সৃষ্টিকারী কণা বাসের মাথায় বসানো ওই যন্ত্রে আটকে যাবে।

শুধু তাই নয়, যেসব এলাকা দিয়ে ওই বাস যাবে, সেখানকার বায়ুদূষণের হার পরিমাপ হয়ে যাবে বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে। অর্থাৎ, পর্ষদের এই উদ্যোগে শুধু বাতাসে দূষণের হার কমানোই নয়, এলাকাভিত্তিক বায়ুদূষণের চিত্রও উঠে আসবে।

সূত্রের খবর, দু’ধরনের যন্ত্র বসানো হচ্ছে সরকারি বাসে। নন-এসি বাসে বসছে ‘বাস রুফ মাউন্টটেড এয়ার ক্লিনিং সিস্টেম (বিআরএমএপিএস)। এর মধ্যে থাকবে দু’ধরনের ফিল্টার। একটি হল হাই এফিসিয়েন্সি পারটিকুলেট এয়ার ফিল্টার বা হেপা ফিল্টার। আরেকটি হল কার্বন ফিল্টার। জোড়া এই ফিল্টারে আটকে যাবে বিভিন্ন দূষণ সৃষ্টিকারী কণা।

অপর যন্ত্রটি বসানো হচ্ছে মূলত এসি বাসে। তার পোশাকি নাম ইন্ডোর এয়ার ফিল্টারেশন সিস্টেম। হেপা ফিল্টার বিশিষ্ট এই যন্ত্রটি ভিতরের দূষিত বাতাস বের করে শুদ্ধ বাতাস শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসের অভ্যন্তরে পাঠাবে।

এ প্রসঙ্গে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে কলকাতা, হাওড়াসহ কয়েকটি জেলায় এই প্রকল্প কার্যকর হবে। ফিল্টার বসানোর সুফল মিললে পরবর্তী সময়ে আরও বড় পরিসরে এই প্রকল্প চালু হবে।’

পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহনের কথায়, পর্যদের আবেদন মেনে এসি-নন-এসি মিলিয়ে ইতিমধ্যে ৪০টি বাস দেওয়া হয়েছে। বাসগুলিতে হেপা ফিল্টার বসানোর কাজ হয়েও গিয়েছে। তার মধ্যে অনেক গাড়ি এখন রাস্তায় চলছে।

উল্লেখ্য, হেপা ও কার্বন ফিল্টার সহ এই বিশেষ যন্ত্রগুলি একটি বেসরকারি সংস্থার থেকে ভাড়া নিচ্ছে পিসিবি। বাস পিছু একটি যন্ত্র বসানো ও রক্ষণাবেক্ষণে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ পড়বে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই ফিল্টারগুলি সাফাই করা হবে। পাশাপাশি যন্ত্রগুলি সচল রয়েছে কি না, যাচাই করতে বিশেষ পরিদর্শক দল নজর রাখবে।